সেন্টার অব ইসলামিক রিসার্চ ফর নিউক্লিয়াস-নিউরন

 

١. بِسۡمِ ٱللهِ ٱلرَّحۡمَـٰنِ ٱلرَّحِيمِِ

٢. ٱلۡحَمۡدُ لِلَّهِ رَبِّ ٱلۡعَـٰلَمِينَِ

সেন্টার অব ইসলামিক রিসার্চ ফর  নিউক্লিয়াস-নিউরন (সির্ণ)

ভূমিকাঃ 

তিনিই সৃষ্টি করেছেন সূর্য, চন্দ্র ও নক্ষত্ররাজি, যা তারই আদেশের আওতাধীন, জেনে রেখো, তাঁরই কাজ সৃষ্টি করা এবং আদেশ প্রদান করা, আল্লাহ বরকতময় জগতসমূহের প্রতিপালক।

(সূরা আল আ’রাফ ৭ : আয়াত ৫৪)

নিশ্চয়ই আল্লাহ পাক সর্বজ্ঞানী, সর্ববিষয়ে খবর রাখেন’ (সূরা হুজুরাত, আয়াত: ১৩)।

https://quranyusufali.com/49/

বলা হয়ে থাকেঃ “বিজ্ঞানের অগ্রযাত্রা সেদিন থেকে শুরু যেদিন মানব মনে সত্যকে জানার আগ্রহ জেগেছিল”। এ অগ্রযাত্রার অগ্র সৈনিক ছিলেন প্রাচীন যুগের ডেমোক্রিটাস, অ্যারিস্টটল, মধ্যযুগের জাবির ইবনে হাইয়ান, এনালগ যুগের আইজ্যাক নিউটন, দিমিত্রি মেন্ডেলিফ, রাদার ফোর্ড, জে.জে. থমসন, ম্যাক্স প্ল্যাঙ্ক, হাইজেনবার্গ এবং ডিজিটাল যুগের আইনস্টাইন প্রমুখ।

গ্রীক প্রাচীন দার্শনিক ডেমোক্রিটাস সত্যকে জানতে চেয়েছিলেন পদার্থের ক্ষুদ্রতম রূপ যে অ্যাটম বা পরমাণু যা অআর ভাঙ্গা যাওয়ার কথা নয় তার মাধ্যমে।

অ্যারিস্টটলের ধারণা হলো, সব পদার্থই আসলে একই জিনিস। এর সঙ্গে ‘ফর্ম’ বা অবস্থা জড়িত। ওই অবস্থার জন্য পদার্থ নানা রূপ নেয়। কখনো পানি, কখনো রুপা, আবার কখনো পাথর বা মাটি। মূল অবস্থাও খুব বেশি নয়, মাত্র চারটা। আগুন, পানি, বাতাস ও মাটি।

অষ্টম শতাব্দীর আরব বিজ্ঞানী জাবির ইবনে হাইয়ান সত্যকে জানতে চেয়েছেন প্রাকৃতিক ১) মার্কারি বা পারদ এবং ২) সালফারের মধ্যে। জাবেরীয় সংজ্ঞায় মার্কারি প্রিন্সিপলটা হলো ‘ঠান্ডা’ ও ‘ভেজা’। অন্যদিকে সালফার হলো ‘গরম’ ও ‘শুকনো’। ইংরেজিতে cool-moisthot-dry। এই চারটা ধর্ম চার মৌলিক পদার্থের মাঝামাঝি নতুন একটা অবস্থানের নির্দেশ করে। এই সালফার-মার্কারি থিওরি অনুযায়ী এই চারটা ধর্মই তৈরি করে মূল সাতটা ধাতুস্বর্ণ, রৌপ্য, তামা, টিন, লোহা, সিসা ‌ও পারদ। 

জাবেরীয় এই মার্কার-সালফারীয় তত্ত্বের আধুনিক সংস্করণ হচ্ছে প্রখ্যাত ইউরোপীয় পদার্থ বিজ্ঞানী দিমিত্রি মেন্ডেলিফের পর্যায় সারণী যা বিজ্ঞানকে আধুনিকীকরণের মাইলফলক হিসেবে গণ্য করা হয়। এরপর মেন্ডেলিফীয় পর্যায় সারণীতে আধুনিক রূপ দান করে রমন ইফেক্ট তত্ত্ব। অবশ্য এর পূর্ববর্তীতে বিজ্ঞানের পরম সত্যে উপনীত হওয়ার লক্ষ্যে এগিয়ে আসেন আইজ্যাক নিউটন। নিউটন প্রকৃতির পরম সত্য জানার ক্ষেত্রে গণিত-কে মূল ভিত্তি করেছিলেন এবং গাণিতিক প্রক্রিয়ায় নিউটন একের পর এক প্রাকৃতিক রহস্যের দ্বার উন্মোচন করেই যাচ্ছিলেন। ফলে বৈজ্ঞানিক জগতে এ ধারণা জন্মে যে, প্রকৃতির ভাষা, প্রকৃতির রহস্য যেন গণিতের মধ্যে নিহিত। বৈজ্ঞানিক ইতিহাস পর্যালোচনায় দেখা যায় বিজ্ঞানের সবচেয়ে স্থিতিশীল সময় ছিল নিউটনীয় চিরায়ত (ক্লাসিক্যাল) বল বিজ্ঞানের যুগ- যার ব্যাপ্তিকাল ছিল অন্ততঃ ৩০০ বছর। 

উল্লেখ্য, পদার্থবিজ্ঞানে সবচেয়ে বেশি বৈপ্লবিক পরিবর্তন ঘটেছে যাঁর হাত দিয়ে, তাঁর নাম আইজ্যাক নিউটন। আলবার্ট আইনস্টাইন নিউটন সম্পর্কে বলেছিলেন, প্রকৃতি তাঁর হাতে স্বেচ্ছায় ধরা দিয়েছে। প্রকৃতির রহস্য নিউটনের মতো করে আর কেউ এতটা উন্মোচন করতে পারেননি। নিউটনের হাত দিয়েই আমরা পেয়েছি আলো এবং বর্ণের সম্পর্ক, মহাকর্ষ বলের গাণিতিক সূত্র ও গতির সূত্র। জ্যোতির্বিজ্ঞানে নিউটনের গতিবিদ্যা প্রয়োগ করার পর বিগত কয়েক হাজার বছরের চেয়ে বেশি অগ্রগতি হয়েছে মাত্র কয়েক বছরের মধ্যেই। গণিতের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ শাখা ক্যালকুলাসের উৎপত্তি ও বিকাশের অন্যতম নায়ক ছিলেন আইজ্যাক নিউটন। বৈজ্ঞানিক আবিষ্কারের সর্বকালের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রকাশনাগুলোর একটি নিউটনের প্রিন্সিপিয়া ম্যাথমেটিকা, যেখান থেকে আমরা পেয়েছি চিরায়ত বলবিজ্ঞান (যাকে আমরা নিউটনীয় বলবিজ্ঞান বলি), গ্রহ-নক্ষত্রগুলোর মধ্যে মহাকর্ষ বলের সূত্র এবং মহাবিশ্বের গতির গাণিতিক অবকাঠামো, জোয়ার-ভাটা, চন্দ্র-সূর্য গ্রহণ এমনকি পৃথিবীর আকাশে ধুমকেতু আগমন-নির্গমনের সুনির্দিষ্ট দিনক্ষণ ইত্যাদি। (সূত্রঃ https://www.bigganchinta.com/physics/newton-life-and-science)। 

কিন্তু ১৯০১ সালে যখন ম্যাক্স প্ল্যাঙ্ক কর্তৃক প্রদত্ত কোয়ান্টাম ধারণা, হাইজেনবার্গের আনসার্টেনিটি থিওরি (অনিশ্চয়তা তত্ত্ব) চিরায়িত বল বিজ্ঞানে যে বৈপ্লবিক পরিবর্তনের হাওয়া তার সূত্রপাত নিউটনের যুগে যখন গাণিতিক সূত্রেও পাওয়া যাচ্ছিল না ভূমিকম্প, দাবানল কিংবা অগ্ন্যুৎপাতের আগাম পূর্বাভাষ। আবহাওয়ার যে পূর্বাভাষ তা-ও চূড়ান্ত পর্বে অনেক সময় তার বাস্তবায়ন দেখা যায় না। ফলে আবহাওয়ার পূর্বাভাষে অনেকটা হাইজেনবার্গের অনিশ্চয়তাবাদ প্রতিফলন ঘটে। তাই আবহাওয়ার পূর্বাভাষে অনেকটা অনিশ্চয়তাসূচক বলা হয়ঃ "ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে" কিংবা "মধ্য বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড়টি আজ ভোর নাগাদ চট্টগ্রাম, কক্সবাজার উপকূলীয় এলাকায় আঘাত হানতে পারে" ইত্যাদি। 

আলবার্ট আইনস্টাইন নিউটনীয়  স্থিতিশীলতা সুরক্ষার স্বার্থে মহাবিশ্বকে স্থির ধরে তাঁর যুগান্তকরী ১৯০৫ সালে বিশেষ এবং ১৯১৫ সালে সাধারণ আপেক্ষিকতা তত্ত্ব রচনা করেছিলেন। যদিও ১৯২০ সালে হাবল টেলিস্কোপে প্রমাণিত হয় মহাবিশ্ব স্থির নয় বরং আলোর বেগে সম্প্রসারণশীল। বলা যায় এই মতানৈক্য থেকেই বৈজ্ঞানিক জগতে অস্থিতিশীলতা পুরোপুরি পেয়ে বসে। 

মজার ব্যাপার হচ্ছে, যে আইনস্টাইন ছিলেন নিউটন এবং তাঁর তত্ত্বের প্রতি পরম শ্রদ্ধাশীল এবং এর বহিঃপ্রকাশ ঘটিয়ে ঐতিহাসিক কোপেনহেগেন ডিবেটে লড়েছিলেন কোয়ান্টাম কণা তত্ত্ববিদ নীলস বোরের সঙ্গে, সেই চিরায়ত বল বিজ্ঞানের প্রতিকূলে প্রথমবারের মতো কোয়ান্টাম মেকানিকস তত্ত্ব ব্যবহার করে ফটো ইলেক্টিক তত্ত্বের আবিস্কার করে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন। সে বিবেচনায় ম্যাক্স প্ল্যাঙ্ক-কে বলা যায় কোয়ান্টাম মেকানিক্সের তাত্ত্বিক স্থপতি আর কোয়ান্টাম মেকানিক্সের প্রায়োগিক (প্রাকটিক্যাল) স্থপতি আলবার্ট আইনস্টাইন। যেমন জেনারেল থিওরি অব রিলেটিভিটির তাত্ত্বিক স্থপতি অআলবার্ট আইনস্টাইন যার বাস্তবতা হাতে কলমে গাণিতিক প্রক্রিয়ায় ব্ল্যাকহোলের সম্ভাবনা তত্ত্বের মাধ্যমে প্রমাণ করেছিলেন প্রসিদ্ধ শোয়ার্জশিল্ড সমীকরণের স্থপতি কার্লস শোয়ার্জশিল্ড। অবশ্য পরিবর্তনের হাওয়া স্বয়ং নিউটনের যুগ থেকে প্রারম্ভ বলা যেতে পারে যখন নিউটন স্বউদ্ভাবিত মধ্যাকর্ষণ  তত্ত্বের সাথে মহাকর্ষ তত্ত্বের মধ্যে যোগসূত্র খুঁজে পাচ্ছিলেন না এবং জীবন সায়াহ্নে দাঁড়িয়ে নিম্নোক্ত কয়েকটি প্রাতঃস্মরণীয় উক্তি ব্যক্ত করেছিলেনঃ  

* সত্য সবসময় সহজবোধ্যতার মাঝে পাওয়া যায়। কখনও জটিলতার মাঝে পাওয়া যাবে না।

* মহাকর্ষ সবসময় আমাদের এটি ব্যাখ্যা করতে পারে যে গ্রহগুলো কিভাবে ঘুরছে। কিন্তু এটি ব্যাখ্যা করতে পারে না যে কে গ্রহগুলোকে এই অবস্থায় রেখেছেন।

* আমরা সাদা চোখে একটি পানির কণা সম্পর্কেই জানতে পারি কিন্তু বিশাল সমুদ্র সম্পর্কে আমাদের জ্ঞান সামান্যই।

* পৃথিবীর এই বিপুল জ্ঞানভাণ্ডারকে জানার ক্ষেত্রে আমি সাগরের তীরে দাঁড়িয়ে থাকা এক শিশুর মতো, যে শুধু সারাজীবন নুড়িই কুড়িয়ে গেল। সমুদ্রের জলরাশির মতো বিশাল এই জ্ঞান আমার অজানাই থেকে গেল।

(https://www.jugantor.com/todays-paper/tutorials/234232/বাণী--আইজ্যাক-নিউটন)|

গণিতকে হাতিয়ার করে নিউটনের মতো জার্মান পদার্থ বিজ্ঞানী আলবার্ট আইনস্টাইন এগিয়ে আসেন এবং যুগান্তকরী দু দুটি তত্ত্ব বিশ্ব সভ্যতাকে উপহার দেন। তত্ত্ব দুটি হচ্ছে ১) বিশেষ ২) এবং সাধারণ আপেক্ষিকতা তত্ত্ব।

পরবর্তীতে সত্যকে জানার বিজ্ঞানের অগ্রযাত্রায় জোয়ার আসে ম্যাক্স প্ল্যাঙকের কোয়ান্টাম মেকানিকস, হাইজেন বার্গের অনিশ্চয়তা তত্ত্বের মাধ্যমে। 

কালের প্রবাহে বর্তমানে এ সত্যকে জানার সর্বশেষ বৈজ্ঞানিক বিষয়বস্তু দাঁড়ায় স্ট্রিং থিওরি- যার ভিত্তিমূল হচ্ছে আধুনিক কসমোলজিক্যাল স্ট্যান্ডার্ড মডেল তত্ত্ব। এই থিওরিতে হাইয়েস্ট এনার্জেটিক রেডিয়েশন থেকে সৃষ্ট বিগ ব্যাংয়ের মাধ্যমে যে মহাবিশ্বের বস্তুগত গাঠনিক তত্ত্ব আমরা লাভ করি তার মূল ধরা হচ্ছে স্ট্রিং থিওরি যাকে বলা হয়ঃ বিজ্ঞানীদের আশার আলো! (https://www.linkedin.com/pulse//সটর-থওর-বজঞনদর-আশর-আল-ramzan-hossain/)।  

উল্লেখ্য, হাইয়েস্ট এনার্জেটিক রেডিয়েশন>বিগ ব্যাং>ফোটন>হিগসবোসন পার্টিকেল>হাইড্রোজেন>হিলিয়াম>>>>>>>হাইয়েস্ট এনার্জেটিক রেডিয়েশন>বিগ ব্যাংস্ট্রিং থিওরি-কে প্রণিধানযোগ্য করে মধ্যবর্তী সৃষ্টিতত্ত্বকে নিছক কম্পিউটার সিমুলেশনে প্রাপ্ত বৈজ্ঞানিক মিথ বা বদ্ধমূল ধারণা ধরে তা বিবেচনাধীন না করি  তাহলে  বদ্ধমূল ধারণার বাইরে আমরা পবিত্র কুরঅআন-হাদীসের অআলোকে বৈজ্ঞানিক সৃষ্টিতত্ত্বের মধ্যে একটা যোগসূত্র খুঁজে বের করতে মহান আল্লাহর অশেষ মেহেরবাণীতে সির্ণ বিবেচনা করতে পারে। সির্ণ মনে করে আইনস্টাইনের সার্বিক একীভূততত্ত্ব কেবল চিরায়িত বল বিজ্ঞান এবং কোয়ান্টাম বল বিজ্ঞানের মধ্যে ঐক্য বা যোগসূত্র রক্ষার মধ্যে সীমাবদ্ধ না রেখে ধর্মের সাথে বিজ্ঞানের, যে একটা অঘোষিত দূরত্ব রয়েছে তা ঘুচাতে আমরা আইনস্টাইনের নামে প্রচলিত একটি উক্তিকে যথার্থ ধরে বলতে পারি "Science without religion is lame, religion without science is blind." । 

অবশ্য সার্বিক একীভূতকরণের অর্থ এই নয় যে, বিজ্ঞানকে অবসর দেয়া, বা বিজ্ঞানীদের অবসরে যাওয়া। বরং একীভূতকরণের ফলে  স্ট্রিং থিওরি, ডার্ক এনার্জি, ম্যাটার আর ব্ল্যাকহোলের ইভেন্ট হরিজনের মত বিষয়ের যা সাধারণ জ্ঞানে কুলোয় না এমনসব কিছুকে এতকাল যাবৎ অবিশ্বাস্য হলেও সত্য, ভূতুড়ে, অদ্ভুতুড়ে কিংবা নিছক টেলিপ্যাথি বলে উড়িয়ে দেয়া হচ্ছিল। এ সব বিষয়ের রহস্যের  দ্বার খুলে দেয়ার লক্ষ্যে- গত শতাব্দীর শেষ দিকে অবশ্য বিজ্ঞানীরা ফ্রন্টিয়ার সায়েন্স এমন এক নতুন বিজ্ঞানের প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠেছিলেন। হতে পারে এই ফ্রন্টিয়ার সায়েন্স-ই বিজ্ঞানের সত্যের অগ্রযাত্রার সফল পরিসমাপ্তি ঘটাতে পারে ইনশাআল্লাহ। 

আরও উল্লেখ্য, বিশ্ব প্রযুক্তিতে যত না এগিয়েছে ডিজিটাল নামে বিজ্ঞান তত পেছাচ্ছে প্রযুক্তির অপব্যবহারজনিত সৃষ্ট গ্লোবাল ওয়ার্মিংয়ের কারণে। বিশ্বে যতই পরিবেশ সচেতনা বাড়ছে ততই উদোর পিন্ডি বিজ্ঞানের ঘাড়ে বর্তানো হচ্ছে। ফলে প্রযুক্তি যত দ্রুত জনপ্রিয় হচ্ছে বিজ্ঞান ততই জনপ্রিয়তা হারাচ্ছে। এ প্রসঙ্গে প্রখ্যাত জ্যোতি পদার্থ বিজ্ঞানী কার্ল সাগানের স্ত্রী অ্যান্ড্রুয়াসের মন্তব্য প্রণিধানযোগ্য। তিনি বলেনঃ আমি এমন মেধাবী ছেলেকে জানি-যারা ভীষণ বিজ্ঞান বিরোধী। সুতরাং, বিজ্ঞানের জনপ্রিয়তার সুরক্ষার স্বার্থে যেমন প্রযুক্তির সদ্ব্যবহার নিশ্চিত করণ জরুরী তেমনি বৈজ্ঞানিক  সৃষ্টিতত্ত্বের সাথে ধর্মীয় সৃষ্টিতত্ত্বের মধ্যে যোগসুত্র বা সেতুবন্ধ সময়ের দাবী বটে। সির্ণ চিরায়িত বল বিজ্ঞান এবং কোয়ান্টাম বল বিজ্ঞানের মধ্যে ঐক্য বা যোগসূত্র রক্ষার পাশাপাশি পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তির উদ্ভাবন এবং ধর্ম এবং বিজ্ঞানের মধ্যে সৃষ্টিতাত্ত্বিক আন্তঃসম্পর্ক প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে নিরলস কাজে বদ্ধপরিকর ইনশাআল্লাহ। 

ওয়ামা তাওফিকী ইল্লা বিল্লাহ। 

জড় (বস্তু)ভিত্তিক বৈজ্ঞানিক সৃষ্টিতত্ত্বের মূল কথা।                                                                                                   

“প্রত্যেক বিষয় মূলে পৌঁছে” (ফারাবী আল আরাবী)। সেমতে বিশ্বের বস্তুতাত্ত্বিক মূল কী? এ প্রশ্নের অনেক জবাব রয়েছে আধুনিক কসমোলজিক্যাল স্ট্যান্ডার্ড মডেল থিওরিতে। এমতে দেখা যায় যে, দৃশ্যমান কিংবা অদৃশ্যমান প্রত্যেক বস্তু-পদার্থের মধ্যেই নিহিত রয়েছে এই বিশ্বের বস্তুতাত্ত্বিক মূল । এ ক্ষেত্রে আমরা বিষয়টি দু স্তরে বিভক্ত করতে পারি যথাঃ ১) সাধারণ পর্যায় ২) বৈজ্ঞানিক পর্যায়।

১) সাধারণ পর্যায়ঃ সাধারণ এ পর্যায়কে বলা যেতে পারে কার্যতঃ বিশ্বের বস্তুতাত্ত্বিক মূলে পৌঁছার অগ্রযাত্রার প্রারম্ভ বা শুরু।

উদাহরণস্বরূপ, হাতের নাগালের যে কোনো বস্তুকে হাতে কিংবা যান্ত্রিক যে কেনো প্রকারে দ্বিখন্ডিত করলেই অতিপারমাণবিকতার অগ্রযাত্রার জন্য যথেষ্ট ।  সাধারণভাবে কোনো বস্তুকে দুই, তিন, চার, পাঁচ, দশ, বিশ খন্ডে খন্ডিত করার পর বস্তু ক্ষুদ্র থেকে ক্ষুদ্রতর হতে হতে এক পর্যায়ে আমরা সাধারণ মানুষ বড়জোর একটি পদার্থকে যা করতে পারি তার নাম "পাউডার" (Powder)  বা "গুঁড়া"।

২) বৈজ্ঞানিক পর্যায়ঃ সাধারণ পর্যায়ের এই পাউডার গুঁড়া-কে অআরও চূর্ণ-বিচূর্ণ করণে বিজ্ঞানীরা কণা চূর্ণকারী যে যন্ত্র ব্যবহার করেন তার নাম  ‘সাইক্লোটন’ যন্ত্র। সার্নের এমন এক নিজস্ব সাইক্লোটন যন্ত্রের নাম ল্যার্জ হ্যাড্রন কোলাইডার যার সাহায্যে বিলিয়ন বিলিয়ন প্রোটন কণা-কে প্রায় অআলোর গতিতে মুখোমুখি সংঘর্ষ ঘটিয়ে লক্ষগুণ সৌর কেন্দ্রের উত্তাপ সৃষ্টি করে সেকেন্ডে ট্রিলিয়ন-ট্রিলিয়ন কম্পনের মাধ্যমে ২০১২ সালে বিশ্বের সর্বৃব হৎ পারমাণবিক গবেষণা কেন্দ্র সার্ণ কর্তৃক কৃত্রিমভাবে মহাবিশ্বের সর্ব আদি ভরসম্পন্ন হিগস বোসন কণা উৎপন্ন করা হয়। এতে সেকেন্ডে ট্রিলিয়ন-ট্রিলিয়ন কম্পন সৃষ্টির  মাধ্যমে কণা উৎপন্নের মাধ্যমে স্ট্রিং থিওরির বাস্তবতা হাতে নাতে প্রমাণিত হয়। 

উল্লেখ্য, কসমোলজিক্যাল স্ট্যান্ডার্ড মডেল থিওরি মতে মহাবিশ্বের মূলে রয়েছে বিগ ব্যাং (মহাবিস্ফোরণ) আর বিগ ব্যাং (মহাবিস্ফোরণ) এর মূলে রয়েছে "হাইয়েস্ট এনার্জেটিক রেডিয়েশন" (উচ্চশক্তি বিকিরণ) যার অপর নাম "সূক্ষ্ণ আলোর গোলক বিন্দু" যা স্ট্রিং তত্ত্ব মতে, "বিন্দু" নয় "সুতা" বা "তারের" ন্যায় লম্বাটে। কণা তত্ত্ব মতে, প্রতিটি কণা কম্পমান। অন্যদিকে স্ট্রিং থিওরিমতেও স্ট্রিং মাত্রই কম্পমান। এই কম্পন বিভিন্ন মাত্রায় ঘটে থাকে। ভিন্ন ভিন্ন মাত্রায় ভিন্ন ভিন্ন বস্তু-পদার্থের কণার উদ্ভব ঘটে। ইলেকট্রনের জন্য এক ধরণের কম্পন, কোয়ার্কের জন্য আরেক ধরণের কম্পন রয়েছে। আল জাবের, দিমিত্রি মেন্ডালিফের "পর্যায় সারণি" কিংবা "রমন ইফেক্ট" তত্ত্বের উৎসমূল বা একক হচ্ছে "স্ট্রিংয়ের কম্পন"। এ হচ্ছে মহাবিশ্বের জড় (বস্তু)ভিত্তিক আধুনিক বৈজ্ঞানিক সৃষ্টিতত্ত্বের মূল কথা। তবে "স্ট্রিং এবং কম্পন স্ট্রেন্‌জ কোয়ার্কের মতই অনুধাবনীয় কিন্তু দর্শনীয় নয়। স্ট্রিং তত্ত্ব বিশেষজ্ঞদের দাবী, স্ট্রি আছে- এবং এর প্রমাণও আছে। তবে তা দেখার মতো মাত্রার মাইক্রোস্কোপ আবিস্কার এখনও বিজ্ঞানীদের জন্য কল্পনার অতীত ব্যাপার। কারণ, বর্তমানে যে রেন্জের মাইক্রোস্কোপ রয়েছে স্ট্রিং এবং তার কম্পন কণা ডিটেক্টরে দেখতে হলে তার দ্বিগুণ মাত্রার মাইক্রোস্কোপের প্রয়োজন হবে।

স্ট্রিং-কে কাঁপান কে?

স্ট্রিং এবং তার কম্পন স্ট্যান্ডার্ড মডেলের জন্য আপাততঃ শেষ কথা হলেও চূড়ান্ত কথা নয় মর্মে CIRNN মনে করে। কারণ, সঙ্গত কারণে নিউটনের মতই একটা প্রশ্ন এক্ষেত্রে উদিত হওয়া স্বাভাবিক বটে। নিউটনের প্রশ্ন ছিলঃ মহাকর্ষ সবসময় আমাদের এটি ব্যাখ্যা করতে পারে যে গ্রহগুলো কিভাবে ঘুরছে। কিন্তু এটি ব্যাখ্যা করতে পারে না যেঃ কে গ্রহগুলোকে এই অবস্থায় রেখেছেন? অনুরূপ CIRNN -এর প্রশ্নঃ স্ট্রিং-কে কাঁপান কে?। CIRNN আরও মনে করে যে, নিম্নোক্ত পরীক্ষণে প্রশ্নটির উত্তর বৈজ্ঞানিক বিশ্লেষণের দাবী রাখে।

পরীক্ষণঃ অতি সূক্ষ্ণ শক্ত কয়েক হাত দীর্ঘ  একটি তার নিই। তারটির অগ্র প্রান্ত-কে A এবং শেষ প্রান্তকে C এবং মধ্যস্থলকে B ধরি। এবার A এবং C-প্রান্তকে টান টান অবস্থায় শক্তভাবে বেঁধে নিই। দেখা যাবে, তারটি নিরব, নিথর অবস্থায় আছে। এ নিরবতা ভঙ্গ করতে এবার মধ্যস্থল B -তে তর্জনী আঙ্গুল দ্বারা আলতোভাবে নাড়া দিলে দেখা যাবে তারটিতে মৃদু কম্পন সৃষ্টি হচ্ছে এবং পাশাপাশি মৃদু গুন্জন বা শব্দও হচ্ছে। যতই তারটিকে নাড়া দেওয়া হবে ততই কম্পন বৃদ্ধি পেয়ে শব্দের মাত্রা বৃদ্ধি পাবে। এখানে তারে যে কম্পন এবং শব্দ সৃষ্টি- তার মূলে কাজ করছে শক্তি (ENERGY)। একটি অতি ক্ষুদ্র এবং দূর্বল প্রাণী মশার গুন্জন অনেকটা জাম্বো জেট কিংবা জঙ্গী বিমানের চেয়ে কম নয়। এর কারণ সেকেন্ডে অগণিত মাত্রায় মশার তার পাখার সন্চালন। মশা যতই তার দৈহিক শক্তি ব্যয় করবে ততই পাখার নাড়া বা সন্চালন বৃদ্ধি পাবে এবং দু পাখায় কম্পনের মাত্রা প্রবলভাবে বেড়ে এক বিকট শব্দের উদ্ভব ঘটাবে। এতে সুস্পষ্ট প্রতীয়মান হয় যে, কম্পন সৃষ্টির মূলে রয়েছে শক্তি আর শক্তির মূলে রয়েছে কর্তারূপ (PERSON) মশা (Mosquito)।

স্ট্রিং-কে কাঁপান কে? হতে পারে এ প্রশ্নের উত্তরে নিহিত আছে, কসমোলজিক্যাল স্ট্যান্ডার্ড থিওরি তথা পদার্থ বিজ্ঞানের পরতে, পরতে, স্তরে স্তরে, অধ্যায়ে অধ্যায়ে কিংবা কথায় কথায় ব্যাখ্যা বিশ্লেষণবিহীন আপনা আপনি উচ্চারিত, বহুল ব্যবহৃত, ব্যাপক জনপ্রিয় শব্দঃ প্রকৃতি (Nature), প্রাকৃতিক (Natural) নামক ব্যাপক অর্থবোধক শব্দ-যে শব্দের উপর ভিত্তি করে বিজ্ঞানের প্রাণ যে ফিজিক্স (Physics)  সেই প্রকৃতি (Nature) শব্দের গভীর তাৎপর্য অর্থবোধকতা। হয়তো প্রকৃতি (Nature) নামক এ শব্দের মধ্যেই লুকিয়ে আছেঃ ১) আইনস্টাইনের স্বপ্নিল সার্বিক একীভূতকরণ তত্ত্বের বীজ (Seeds) ২) মহাকর্ষ বল এবং তার প্রতিবল গ্রাভিটনের কুল-কিনারা, ৩) ডার্ক এনার্জি-ডার্ক ম্যাটারের ব্যাখ্যা ৪) বিজ্ঞানীদের আশার আলো স্ট্রিং থিওরির বাস্তবতা এবং ৫) বিজ্ঞানীদের আগামীদিনের স্বপ্নিল নতুন বিজ্ঞান ফ্রন্টিয়ার সায়েন্সের আশা-প্রত্যাশা

মহাবিশ্বের বস্তুতাত্ত্বিক সংজ্ঞা

স্থান ও সময় এবং এদের অন্তর্ভুক্ত সকল বিষয় নিয়েই মহাবিশ্ব। পৃথিবী এবং অন্যান্য সমস্ত  গ্রহ , সূর্য ও অন্যান্য তারা ও নক্ষত্র জ্যোতির্বলয় স্থান ও এদের অন্তর্বর্তীস্থ গুপ্ত পদার্থ , ল্যামডা-সিডিএম নকশা  ও শূণ্যস্থান (মহাকাশ) - যেগুলো এখনও তাত্ত্বিকভাবে অভিজ্ঞাত কিন্তু সরাসরি পর্যবেক্ষিত নয় - এমন সবপদার্থ ও শক্তি মিলে যে জগৎ তাকেই বলা হচ্ছে মহাবিশ্ব

পুরো বিশ্বের আকার বিজ্ঞানীদের অজানা থাকলেও এর উপাদান ও সৃষ্টিধারা নিয়ে বেশ কয়েকটি hypotheses (অনুমান) বিদ্যমান। মহাবিশ্বের উৎপত্তি সংক্রান্ত বিষয়কে বলে বিশ্বতত্ত্ব। দৃশ্যমান মহাবিশ্বের সুদূরতম প্রান্তের পর্যবেক্ষণ ও বিভিন্ন তাত্ত্বিক গবেষণায় মনে হয় মহাবিশ্বের প্রতিটি প্রক্রিয়াই তার সৃষ্টি থেকেই একই ধরণের প্রাকৃতিক নিয়ম দ্বারা নির্ধারিত হয়।(উইকিপিডিয়া)

 অতি পারমাণবিক অন্দর মহলে যে ভাবে সবল নিউক্লিয় বল বুদ্ধিমাত্রিক কাজ করে

ভেনেনজিয়ানো সবল নিউক্লিয় বলগুলো নিয়ে কাজ করতে গিয়ে এ প্রশ্নের সম্মুখীন হন যে, নিউক্লিয়াসের ভিতর বিদ্যমান নিউট্রন-প্রোটন কিভাবে পরস্পর বিপরীতধর্মী চার্জধারী হওয়া সত্বেও কোনো প্রকার মিথস্ক্রিয়া বা সংঘর্ষে লিপ্ত না হয়েই শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান করে থাকে?

ভেনেনজিয়ানোর প্রশ্নের সমাধান মেলে মেসন-গ্লুয়ন ইন্টার অ্যাকশনের ব্যাখ্যার মধ্যে। এই ইন্টার অ্যাকশনের ব্যাখ্যা মেলে মারে গেলমানের  “কোয়ার্কগুলো নিউট্রন ও প্রোটনের মধ্যে গ্লুওন কণা বিনিময় করে”-এই দাবীমূলে।

এক গবেষণায় জানা যায়, নিউট্রন-প্রোটনগুলো পরস্পরের মধ্যে সুতার (স্ট্রিং) মালার ন্যায় কাজ করে বলবাহী মেসন কণা-যার নেপথ্যে রয়েছে সবল নিউক্লিয় বল।

অতি পারমাণবিক বহিঃ মহলে যে ভাবে সৌর ঝড় বুদ্ধিমাত্রিক কাজ করে

সূর্যের অভ্যন্তরে যে সৌরজাগতিক বিস্ফোরণ ঘটে তাতে হাইড্রোজেন ও হিলিয়াম পরমাণু আন্দোলিত হয় এবং সূর্যের উত্তপ্ত বহিঃস্তর “করোনা” (Corona) থেকে নির্গত ইলেকট্রন ও প্রোটন ঝড়ের বেগে  দ্রুতগতিতে পৃথিবীর দিকে ধেয়ে আসতে শুরু করে-যাকে বলা হয় “সৌর ঝড়” বা “সৌর বায়ু”। এই ঝড় মুক্ত চার্জযুক্ত প্লাজমা কণা, গামা রশ্মি, রন্জন রশ্মি (এক্সরে) এর মতো ক্ষতিকর রশ্মির সমন্বয়ে গঠিত। কিন্ত্ত পৃথিবীতে ছুটে আসার সময় এই “সৌর ঝড়” নিজেই তার চার পাশে স্বয়ংক্রিয়ভাবে (Automatically) একটি “চৌম্বক ক্ষেত্র” তৈরি করে যা “করোনাল মাস ইজেকশন” (coronal mass ejection (CME) নামে পরিচিত। https://en.wikipedia.org/wiki/Coronal_mass_ejection

এই চৌম্বক ক্ষেত্রের শক্তি বিপুল। ১০০ কোটি পারমাণবিক বোমা একসঙ্গে বিস্ফোরিত হলে যে পরিমাণ ধ্বংস শক্তির উদ্ভব হয়- ঠিক ততটা ধ্বংস শক্তির অধিকারী এই সৌর জাগতিক চৌম্বক ক্ষেত্র যা পৃথিবীকে নিমিষে ধ্বংস করে দিতে যথেষ্ট। তবে, পৃথিবীর নিজস্ব চৌম্বক ক্ষেত্রের কাছাকাছি এলে এই সৌরঝড় রহস্যজনকভাবে দিক পরিবর্তন করে আবার সূর্যের দিকে ফিরে যায়; যেমন আবহাওয়া জগতে “১০ নং মহাবিপদ সংকেত” অনুযায়ী ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড়টি উপকূলীয় এলাকায় প্রচন্ড বেগে শুরু হওয়ার পূর্ব মুহূর্তে রহস্যজনকভাবে দিক পরিবর্তন করে “অনির্ধারিত” এবং “অনির্দিষ্ট” স্থানে আঘাত হানে অথবা দূর্বল হয়ে পড়ে ।  

জ্বালানী বিহীন সূর্য যে প্রক্রিয়ায় জ্বলে!

কেরোসিন ছাড়া চেরাগ বাতি, বিদ্যুৎ ছাড়া ইলেকট্রিক বাল্ব, কলকারখানা, কম্পিউটার, মোবাইল এবং গ্যাস (সিএনজি), পেট্রোল-ডিজেল ছাড়া গাড়ি চলে না। কিন্ত্ত পৃথিবী থেকে অন্ততঃ ১৩ লক্ষ গুণ বড় সূর্য নামক বাতিটি অন্ততঃ ৫০০ কোটি বছর ব্যাপী জ্বলছে তো জ্বলছে। তাতে কখনও লোড শেডিং হয়েছে বলে জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের কাছে নির্ভরযোগ্য কোনো তথ্য নেই। বিজ্ঞানীদের বিশ্বাস, সূর্য নাকি এভাবে তেল মোবিল ছাড়া আরও শ চারেক বছর ধরে কোনো প্রকার লোডশেডিং ছাড়াই নাকি জ্বলতে থাকবে! 

আমরা জানি, সূর্যে তেল-মোবিল, পেট্রোল-ডিজেল তো নে-ই উপরন্তু জ্বলার জন্য সূর্যে এমন “আকর্ষণধর্মী কণা” থাকা দরকার যারা “পরস্পর মিলিত” হয়ে (অনেকটা পুংকেশর+স্ত্রী কেশর, কিংবা স্পার্ম+ওভামের মত) ফিউশন বিক্রিয়ার মাধ্যমে সূর্যের জ্বালানীরূপ “ভ্রুণ”অর্থাৎ “হিলিয়াম” তৈরি করতে পারে। কিন্তু সূর্যে রয়েছে তার উল্টো “বিকর্ষণধর্মী” কণা প্রোটন (হাইড্রোজন)। ফলে সূর্যে বিদ্যমান প্রোটন দ্বারা সূর্যের জ্বালানীর উৎস হিলিয়াম আদৌ তৈরি হওয়ার কথা নয় কিন্ত্ত অর্ধ সহস্র কোটি বছর যাবৎ “বিকর্ষণধর্মী” এই প্রোটন (হাইড্রোজন) কণারা দিব্যি হিলিয়াম তৈরি করে সূর্যকে জ্বালাচ্ছে কোনো প্রকার তেল-মোবিল ছাড়াই। আরও অন্ততঃ চারশত কোটি বছর সূর্যকে জ্বালাতে সক্ষম মর্মে বিজ্ঞানীদের দাবী। কিন্ত্তু কীভাবে?

সূর্যসহ নক্ষত্রের কেন্দ্রে হাইড্রোজেনরা (যারা পরস্পর বিকর্ষণধর্মী হয়েও) পরস্পর যুক্ত হয়ে কোয়ান্টাম মেকানিকসের এক অভিনব কৌশল অবলম্বন করে প্রোটন কণার মাধ্যমে সূর্যের “জ্বালানীর মৌলিক উৎস”রূপে অপেক্ষাকৃত বড় ধরণের পরমাণু “হিলিয়াম” তৈরি করে থাকে। অভিনব কোয়ান্টাম মেকানিকসীয় কৌশলটি নিম্নরূপঃ

সূর্যের কেন্দ্রে প্রতি সেকেন্ডে ৪x১০৩৮টি প্রোটন (হাইড্রোজেনের) কণা সেকেন্ডে প্রায় ৫০০ কিলোমিটার বেগে পরস্পর অভিনব কায়দায় মিলিত হয়ে হিলিয়াম তৈরি করে। সূর্যের অআলো এবং তাপ তৈরির জন্য সূর্যে বিদ্যমান প্রোটনের প্রতি ১০২৮টির একটি অন্যটির সাথে মিলন হলেই যথেষ্ট। প্রোটন ধনাত্মক চার্জধারী কণা বিধায় এ কণা আকর্ষণের পরিবর্তে সাধারণতঃ বিকর্ষণ করে থাকে । অথচ হিলিয়াম তৈরির জন্য জরুরী হচ্ছে পরস্পর আকর্ষণ যাতে কনসিভ হতে পারে হিলিয়াম।

এই জরুরী প্রয়োজন মেটাতে প্রোটন (হাইড্রোজেনের) গ্রহণ করে থাকে এক অভিনব কোয়ান্টাম কৌশল। কৌশলটা পদার্থ বিজ্ঞানের পরিভাষায় কোয়ান্টাম মেকানিকসীয় ট্রাকটিস। এ ক্ষেত্রে প্রোটন কণারা তাদের স্বভাবধর্মে এক অভিনব পরিবর্তন আনে। অর্থাৎ কণা তার ধর্মান্তর হয়ে কোয়ান্টাম কণায় পরিণত হয়।

অআরও গভীর স্তরে এই কণাগুলো নিছক কণা হিসেবে অআচরণ করে না।প্রতিটি প্রোটন একেকটি কোয়ান্টাম কণায় পরিণত হয় যার প্রতিটির রয়েছে তরঙ্গ ফাংশন। বৈদ্যুতিক চার্জ তাদের দূরে রাখলেও এরা তরঙ্গ মালায় পরিণত হয়ে একে অপরের খুব কাছে চলে আসে অনেকটা ইলেকট্রনের মতো। এমতাবস্থাকে পদার্থ বিজ্ঞানের পরিভাষায় বলা হয় কোয়ান্টাম ট্যানেলিং ।

ইসলামী সৃষ্টি তত্ত্বের ইতিকথাঃ

ইসলামী সৃষ্টি তত্ত্বঃ

আবদুল্লাহ বিন আমর রদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আ'লাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেন, ইয়াজূজ মাজূজ আদম সন্তানেরই একটি সম্প্রদায়। (তাবারানী)।

হাফেজ ইবনে হাজার (রহঃ)-এর মতে, তারা নূহ (অআঃ) এর পুত্র ইয়াফিসের পরবর্তী বংশধর। (সূত্রঃ নেদায়ে ইসলাম, কুরআন হাদীস রিসার্চ সেন্টার, কেয়ামতের আলামতঃ বর্ষ ৮২, সংখ্যা ০১, জিলহজ্ব, ১৪৪৩, পৃষ্ঠা ৩৫)।

আবদুল্লাহ বিন আমর রদ্বিয়াল্লাহু আনহু বলেন, দশ ভাগে আল্লাহপাক সৃষ্টিকে বিভক্ত করেছেন। তন্মধ্যে নয়টি ভাগে ফেরেশতাদের সৃষ্টি করেছেন। বাকী একটি ভাগে অবশিষ্ট সকল সৃষ্টিকে সৃষ্টি করেছেন। ফেরেশতাদের দশভাগে বিভক্ত করেছেন। তন্মধ্যে নয়টি ভাগ দিন-রাত বিরামহীনভাবে আল্লাহর আদেশমতে কাজ করে চলছে। একটি ভাগ আল্লাহ পাক নবী-রসূলদের কাছে প্রেরণের জন্য নির্দিষ্ট করেছেন। অতঃপর সাধারণ সৃষ্টিকে আবার দশটি ভাগে বিভক্ত করেছেন। তন্মধ্যে নয়টি ভাগে জ্বিন তৈরি করেছেন একভাগে আদম সন্তান। অতঃপর আদম সন্তানকে আল্লাহ পাক দশভাগে ভাগ করেছেন। তন্মধ্যে নয় ভাগে সৃষ্টি করেছেন ইয়াজূজ মাজূজ, আর অবশিষ্ট এক ভাগে সকল মানুষ। (আল হাদীস,মুস্তাদরাকে হাকিম, (সূত্রঃ নেদায়ে ইসলাম, কুরআন হাদীস রিসার্চ সেন্টার, কেয়ামতের আলামতঃ বর্ষ ৮২, সংখ্যা ০১, জিলহজ্ব, ১৪৪৩)।

বিসমিল্লাহির রহমানির রহীম

 “তিনি যখন কোন কিছু করতে ইচ্ছা করেন, তখন তাকে কেবল বলে দেন ‘হও’ তখনই তা হয়ে যায়” । (সূরা ইয়া-সী-ন)।

 “তিনিই সঠিকভাবে নভোমন্ডল ও ভূমন্ডল সৃষ্টি করেছেন।” (সূরা আনআ’মঃ আয়াত ৭৩)।

“তিনি অদৃশ্য সম্বন্ধে পরিজ্ঞাত, আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীতে অণু পরিমাণ কিছু কিংবা তদপেক্ষা ক্ষুদ্র অথবা বৃহৎ কিছু যাঁর অগোচর নয়; ওর প্রত্যেকটি সুস্পষ্ট গ্রন্থে লিপিবদ্ধ।” (সূরাহ্ সাবা, আয়াতঃ ৩)

 “বিশ্ব বলিতে পূর্বে কিছুই ছিলনা”। (ফাতওয়ায়ে সিদ্দিকীন, ১ম খন্ড, পৃষ্ঠাঃ ৭৪, কুরআন হাদীস রিসার্চ সেন্টার (ফুরফুরা দরবারের গবেষণা প্রতিষ্ঠান), প্রকাশনায়ঃ ইশায়াতে ইসলাম, কুতুবখানা, মার্কাজে ইশায়াতে ইসলাম, ২/২, দারুস সালাম, মীরপুর, ঢাকা-১২১৬), প্রকাশকালঃ সাবান-১৪২০হিজরি, নভেম্বর ১৯৯৯ ঈসায়ী “গোটা সৃষ্টিকূলের মধ্যে আল্লাহ তাআলার কুন ফা ইয়া কুনের তাজাল্লীই বিরাজমান” (প্রাগুক্ত পৃঃ ৩৮)।

“আসমান-যমীন, আরশ কুরসী লাওহ-কলম, গাছ পালা, বৃক্ষ লতা, এক কথায় দৃশ্যমান ও অদৃশ্য যত কিছু রয়েছে “সব কিছুই সৃষ্টি করেছেন মহান আল্লাহ” (প্রাগুক্ত পৃঃ ৩৩)। “আল্লাহ তায়ালা সমস্ত বস্তুকে পূর্ব উপাদান ব্যতীত সৃষ্টি করেছেন” (প্রাগুক্ত পৃঃ ১৬২(আল্লাহপাক) “বিশেষ মুছলেহাতের কারণে প্রথমে বিনা উপাদানে উপকরণে সৃষ্টি করে, সেই সব উপাদানের মাধ্যমে বিভিন্ন বস্তু সৃষ্টি করার ব্যবস্থা চালু করেছেন”(সূত্রঃ ফাতাওয়ায়ে সিদ্দিকীন, ১-৪ খন্ড, পৃষ্ঠা ১৬৩)

উল্লেখ্য, এক সময় কেবলই আল্লাহ আর আল্লাহ-ই ছিলেন। মহান আল্লাহ ব্যতিত সৃষ্টি সত্বার কোন অস্তিত্ব কখনই ছিল না। কোন এক মহাসন্ধিক্ষণে আল্লাহপাক তাঁর কুদরতি এক মহাপরিকল্পনার (Master Plan) অধীনে ‘কুন’ হয়ে যাও‘’- এই কুদরতি আদেশ বা হুকুমবলে সম্পূর্ণ ‘নাই’ (Nil/Zero) থেকে কোন প্রকার জাগতিক তত্ত্ব, তথ্য, উপাত্ত, সূত্র, আইন-কানুন, বিধি-বিধান থেকে সম্পূর্ণ পুতঃপবিত্র (সুবহান) এবং অনির্ভরশীল(স্বমাদ) হয়ে সৃষ্টি করলেন এক মহাসৃষ্টি সত্বা (Great Creation) বা ﻣﺨﻟﻖ)-যাতে সম্মিলিতভাবে (Combined) নিহিত ছিল আকাশ/মহাকাশ।

 “অতঃপর তিনি আসমানের দিকে মনোনিবেশ করলেন, যা ছিল ধুম্রকুঞ্জ (দুখান)।” (পবিত্র কোরআনুল করীমঃ তফসীর মাআরেফুল ক্বোরআন, পৃষ্ঠাঃ ১২৯৪)। উক্ত আয়াতের ব্যাখ্যা নিম্নরূপ : (১) বয়ানুল কোরআনে হযরত মাওলানা আশরাফ আলী থানভী (রহঃ) বলেনঃ আমার মনে হয় যে, প্রথমে পৃথিবীর উপকরণ সৃজিত হয়েছে। এমতাবস্থায় ধুম্রকুঞ্জ এর আকারে আকাশের উপকরণ নির্মিত হয়েছে। এরপর পৃথিবীকে বর্তমান আকারে বিস্তৃত করা হয়েছে এবং এতে পর্বতমালা, বৃক্ষ ইত্যাদি সৃষ্টি করা হয়েছে। এরপর আকাশের তরল ধুম্রকুঞ্জ এর উপকরণকে সপ্ত আকাশে পরিণত করা হয়েছে। (পবিত্র কোরআনুল করীমঃ তফসীর মাআরেফুল ক্বোরআন, পৃষ্ঠাঃ ১১ 

(২) পবিত্র কুরআনের মতে, বিশ্ব জগৎ আদিতে ছিল একটি বিশালকার একক পিন্ডাকৃতির বস্তু-সুক্ষ্ণাতি সুক্ষ্ণ অণু-পরমাণু বিশিষ্ট গোলক-যাকে দুখান বলা হয়েছে। এই দুখান হলো স্তর বিশিষ্ট এমন এক গ্যাস জাতীয় পদার্থ যা স্থিরভাবে ঝুলানো এবং যার মধ্যে বস্তু-সুক্ষ্ণাতি সুক্ষ্ণ অণু কণা উচ্চতর বা নিম্নতর চাপের দরুণ কখনও কঠিন, এমনকি কখনও বা তরল অবস্থায় বিদ্যমান ছিল। মহাকালের বিভিন্ন পর্যায়ে সেই মহাপিন্ডটি খন্ড বিখন্ড হয়ে তৈরী হয়েছে এক একটি নীহারিকা বা ছায়াপথ এবং সেই সব ছায়াপথ সূর্যের মত কোটি কোটি নক্ষত্র নিয়ে একটা একটা পৃথক জগৎ রূপে মহাশূণ্যে সঞ্চারমান। আদি গ্যাসীয় পিন্ডের খন্ড বিখন্ড হয়ে পড়া বিশালকার টুকরাগুলি কালক্রমে আবার একীভুত হয়ে সূর্যের মত এক একটি নক্ষত্র সৃষ্টি করেছে। ...... বিজ্ঞানীরা বলছেন, বিশ্ব সৃষ্টির আদিতে ছিল ‘নীহারিকা’ বা ‘নেবুলা’ যা মূলতঃ গ্যাসীয় ধুম্রপিন্ড এর অনুরূপ। দেখা যাচ্ছে, বিশ্ব সৃষ্টি সম্পর্কে পবিত্র কুরআনের বক্তব্য আধুনিক বিজ্ঞানের আবিস্কৃত তথ্যের সাথে সম্পূর্ণ সামঞ্জস্যপূর্ণ।” {সূত্র: কম্পিউটার ও আল-কুরআন)।

 “পবিত্র কুরআনের মতে, বিশ্ব জগৎ আদিতে ছিল একটি বিশালকার একক পিন্ডাকৃতির বস্তু-বস্তু-সুক্ষ্ণাতি সুক্ষ্ণ অণু পরমাণু বিশিষ্ট গোলক।”(সূত্র: কম্পিউটার ও আল-কুরআন, কুরআন-হাদিস রিসার্চ সেন্টার, ইশায়াতে ইসলাম কুতুবখানা, দারুস্ সালাম, ঢাকা)। “বিশ্ব সৃষ্টি সম্পর্কে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াতের অনুসারীগণ পরমাণুবাদের সমর্থক” (সূত্রঃ আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াতের আকিদাঃ ফতেহ্ আলী মোহাম্মাদ আয়াতুল্লাহ সিদ্দিকী আল্ কোরাইশী, নেদায়ে ইসলাম, বর্ষঃ ৭৩, সংখ্যা-৬, মহররম-সফর )।

রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আ'লাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেন, হযরত নূহ তাঁর পুত্রকে বললেন, আমি তোমাকে নসীহত করছি এবং যাতে ভুলে না যাও সে জন্য অত্যন্ত সংক্ষেপে বলছি। আর উহা এই যে, দুটি কাজ করার অসিয়ত করছি তা এমন যে, আল্লাহ তায়ালা এতে অত্যন্ত খুশি হন, আল্লাহ তায়ালার নেক মাখলুকও খুশি হয় এবং আল্লাহ তায়ালার নিকট এই দুই কাজের কবুলিয়াতও অনেক বেশি। Rasulullah Sallallahu Alayhi Wasallam said, Hazrat Nuh (A.S.) said to his son, I advise you and tell you very briefly so that you do not forget. And this is that I am bequeathing to do two things that will please Allah the Exalted, make the righteous servants of Allah happy, and  these two deeds will more acceptable by Allah.
তন্মধ্যে একটি হচ্ছে “লা-ইলা-হা ইল্লাল্লাহ”। যদি সমস্ত আসমান ও যমীন একত্র হয়ে একটি গোলাকার বৃত্ত হয়ে যায় তবুও এই পাক কালিমা উহাকে ভেদ করে আসমানের উপর পৌঁছে যাবে। আর সমস্ত আসমান ও যমীন-কে যদি এক পাল্লায় রাখা হয় আর দ্বিতীয় পাল্লায় এই পাক কালিমাকে রাখা হয়, তবে কালিমার পাল্লাই ঝুঁকে যাবে।
 বৈজ্ঞানিক বিশ্লেষণঃ  নিউট্রিনো প্রাকৃতিক মৌল কণা। এ কণাটি প্রায় ভরশূন্য। অর্থাৎ অতি স্বপ্লমাত্রার ভরত্বের অধিকারী এবং ভরশূন্য ফোটনের প্রায় কাছাকাছি। তাই নিউট্রিনো প্রায় আলোর গতিতে চলে। এমনকি ২০১১ সালে সার্ণে কর্তৃক অপেরা প্রকল্পের অধীনে পরিচালিত এক গবেষণায় নিউট্রিনো আলোর চাইতে অন্ততঃ ৬০ ন্যানো সেকেন্ড বেশি দ্রুত প্রমাণিত হলে এতে আইনস্টাইনের সুপ্রতিষ্ঠিত (যার উপর ভিত্তি করে কসমোলজিক্যাল স্ট্যান্ডার্ড মডেল থিওরি, পদার্থবিজ্ঞানের প্রমাণিত যতসব সূত্র রচিত) বিশেষ আপেক্ষিকতা তত্ত্ব ভেঙ্গে পড়ার আশংকায় নিউট্রিনোর এই গতি প্রত্যাখ্যান করেন স্টিফেন হকিংসহ বিশ্বের খ্যাত নামা বিজ্ঞানীরা এবং পুনঃরীক্ষার দাবীর পরিপ্রেক্ষিতে ১৬০০১তম পরীক্ষায় প্রমাণিত হয় নিছক যান্ত্রিক কারণে নিউট্রিনো আলোর চাইতে অন্ততঃ ৬০ ন্যানো সেকেন্ড বেশি দ্রুত দেখাচ্ছিল।
 যাহোক, নিউট্রিনোতে রয়েছে ইলেকট্রনের মতো আলোর তরঙ্গ ফাংশন। যদিও নিউট্রিনো কিছুটা ভরসম্পন্ন কণা প্রমাণিত কিন্তু এর রয়েছে কোয়ান্টাম ট্যানেলিং ক্ষমতা। কেহ যদি জোনাকি পোকার মত কোনো কিছু হাতের মুঠোয় পুরে নেয় তাহলে তাকে হাতের মধ্যেই পাওয়া যাবে, স্প্রিট হাতে নিলে তা কিছু ক্ষণ পর শুন্য হয়ে যাবে। নিউট্রিনোও তেমন কেহ হাতে পুরে নিলে কোয়ান্টাম ট্যানেলিং পদ্ধতিতে ফাঁকি দিয়ে উধাও হয়ে যাবে। বিজ্ঞানীদের দাবীঃ যদি কয়েক অআলোক বর্ষ পুরু সীসার পাত দ্বারা নিউট্রনোর গতি ঠেকিয়ে রাখতে কেউ চান, তাহলেও নিউট্রিনো সীসার ঐ পুরু পাত পেরিয়ে শূন্যে মিলিয়ে যাবে! যেমন “লা-ইলা-হা ইল্লাল্লাহ”। যদি সমস্ত আসমান ও যমীন একত্র হয়ে একটি গোলাকার বৃত্ত হয়ে যায় তবুও এই পাক কালিমা উহাকে ভেদ করে আসমানের উপর পৌঁছে যাবে।
 নিউট্রিনোরা কতটা নিষ্ক্রিয়, তার একটা ছোট উদাহরণ দেওয়া যাক। মানুষের দেহের প্রতি বর্গ সে.মি. জায়গার মধ্য দিয়ে প্রতি সেকেন্ডে
১০১২টি নিউট্রিনো অতিক্রম করছে। কিন্তু এদের কোনোটিই দেহের সঙ্গে সামান্যতম বিক্রিয়া করে না। তাই আমরা এদের অস্তিত্ব শনাক্ত করতে পারি না। আলফা, বিটা বা গামা
রশ্মির মতো এরা মানব দেহের কোষের সঙ্গে বিক্রিয়ায় অংশ নিলে যেকোনো মানুষ কয়েক সেকেন্ডের মাঝে মারা যেত। তাই এদের নিষ্ক্রিয়তা আমাদের জন্য আশীর্বাদ স্বরূপ বলা যায়।
চূড়ান্ত মাত্রায় নিষ্ক্রিয় হওয়ায় পথ চলার সময় নিউট্রিনোদের শক্তির ক্ষয় হয় না বললেই চলে। তাই এদের গতি রোধ করা প্রায় অসম্ভব এক কাজ। সবকিছু ভেদ করে চলে যেতে পারে এরা। যদি নিউট্রিনোদের থামানোর জন্য এক
আলোকবর্ষের (৯.৪×১০১২ কিলোমিটার) সমান পুরত্বের লেডের দেয়াল বানানো হয়, তাহলেও কেবল অর্ধেক নিউট্রিনোদের আটকানো যাবে। বাকিরা ঠিকই ফাঁক গলে বেরিয়ে যাবে। (https://www.bigganchinta.com/physics/qx95omgznn)আর দ্বিতীয় যে কাজটি করতে হবে তা হলো-সুবহানাল্লাহি ওয়াবিহামদিহী পড়া। কেননা এই কালিমা সমস্ত মাখলুকের। আর এরিই বরকতে সমস্ত মাখলুককেএ রিযিক দান করা হয়। কিন্ত্ত তোমরা তাদের কথা বুঝতে পার না। (আল হাদীসঃতারগীব, নাসাঈ)।
 বৈজ্ঞানিক বিশ্লেষণঃ ০২  
 “লা-ইলা-হা ইল্লাল্লাহ”। পবিত্র কুরঅআনের অবিচ্ছেদ্য অংশ। সূরাহ বাক্বরাহসহ বহু সূরাহতে “লা-ইলা-হা ইল্লাল্লাহ” রয়েছে। ওয়াহি নাজিলের সময় মহানবী সাঃ প্রচন্ড শীতেও ঘেমে যেতেন। ভরত্বের কারণে সওয়ারী রীতিমত বসে যেতো। প্রতিটি অক্ষর এক একটি শব্দ। পদার্থ বিজ্ঞানমতে, শব্দ এক প্রকার শক্তি বিশেষ। গাড়ির ইন্জিনের ঘড় ঘড় শব্দ কম্পনের সৃষ্টি করে। আবার কম্পনও শব্দ সৃষ্টি করে। প্রচন্ড বজ্রপাতের শব্দে জানালায় কম্পন সৃষ্টি হতে জানালার কাঁচ ভেঙ্গে পড়ে। কানের পর্দা ছিঁড়ে যায়। আইনস্টাইনের ভরশক্তি সমীকরণমতে, জমে থাকা শক্তি জমাটবদ্ধ বস্তুর মতই। সুতরাং, “লা-ইলা-হা ইল্লাল্লাহ”-এ নিহিত রয়েছে ২৪টি অক্ষর, প্রতিটি অক্ষর আবার অনেকগুলি স্বরধ্বনির সমাহার। যেমন আলিফ (আ+ল+ই+ফ=আলিফ)অক্ষরটিতে অন্ততঃ ৪টি স্বরধ্বনি রয়েছে যা শক্তিরই প্রকাশ মাত্র। অআইনস্টাইন তত্ত্বমতে, প্রতিটি শক্তির যেমন ভর রয়েছে তেমনি প্রতিটি ভরে রয়েছে শক্তি। 
এমতাবস্থায় “লা-ইলা-হা ইল্লাল্লাহ” এর ওজন এবং ভর বৈজ্ঞানিকভাবে প্রমাণিত।
 পরিচ্ছেদঃ ২৬৭৮. সুবহানাল্লাহ পড়ার ফযীলত

ইসলামিক ফাউন্ডেশন হাদিস নাম্বারঃ ৫৯৬৪, আন্তর্জাতিক নাম্বারঃ ৬৪০৬

৫৯৬৪। যুহায়র ইবনু হারব (রহঃ) ... আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ দুটি বাক্য এমন যে, মুখে তার উচ্চারনণ অতি সহজ কিন্তু পাল্লায় অনেক ভারী, আর আল্লাহর কাছে অতি প্রিয়। তা হলঃ সুবাহানআল্লাহি ওয়া বিহামদিহি সুবাহানআল্লাহিল আযীম।

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)  বর্ণনাকারীঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ)  পুনঃনিরীক্ষণঃ   সহীহ বুখারী (ইসলামিক ফাউন্ডেশন)  ৬৭/ দু’আ (كتاب الدعوات) (সূত্রঃ https://www.hadithbd.com/hadith/detail/?book=1&section=26)

 স্ট্যান্ডার্ড
মডেলের সাহায্যে আধুনিক কসমোলজি মহাবিশ্বের উৎপত্তি ও ক্রম বিকাশ বুঝতে সাহায্য করার
পাশাপাশি পদার্থ ও শক্তির নতুন দিগন্ত খুলে দিচ্ছে। বিংশ শতাব্দীর দ্বিতীয় ও তৃতীয়
দশকে অবজারভেশনাল কসমোলজির বিকাশ শুরু হতে থাকে টেলিস্কোপের সাহায্যে মহাবিশ্ব পর্যবেক্ষণের
মাধ্যমে। বিজ্ঞান-প্রযুক্তির দক্ষতা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে টেলিস্কোপের ক্ষমতাও বৃদ্ধি
পেয়েছে। মানুষ মহাকাশ যান পাঠিয়ে মহাকাশে হতে প্রচুর উপাত্ত সংগ্রহ করেছে। এই উপাত্তগুলোকে
তত্ত্বীয় কাঠামোয় বিশ্লেষ করার জন্য গড়ে উঠল ভৌত বা ফিজিক্যাল কসমোলজি (সূত্রঃ বিজ্ঞান
চিন্তা, পৃঃ ১৬)।

মহাবিশ্ব প্রসারিত হলে আলোর তরঙ্গ দৈর্ঘ্য বেড়ে যায়। আলোর তরঙ্গ শক্তি কমে যায়। ফলে আলোর কোয়ান্টা ফোটন অদৃশ্য মাইক্রোওয়েভে পরিণত হয় যা আধুনিক কসমোলজিক্যাল স্ট্যান্ডার্ড মডেলে Cosmic Microwave back ground Radiation নামে পরিচিত। এই রেডিয়েশনের কম্পিউটার সিমুলেশনের মাধ্যমে জানা যায় বিগ ব্যাংয়ের মাধ্যমে হাইয়েস্ট এনার্জেটিক রেডিয়েশন হতে কী পরিমাণ শক্তি বা পদার্থ মহাবিশ্বে ছড়িয়ে পড়েছিল। তাছাড়া আরও জানা যায়, মহাবিশ্বের উৎপত্তি, ক্রমবিকাশ সম্পর্কে বুঝতে সাহায্য করার পাশাপাশি পদার্থ ও শক্তির নতুন দিগন্ত খুলে দিচ্ছে। (বিচি, পৃঃ ১৬)।

রহস্যময় মহাকর্ষের সঠিক ব্যাখ্যা কী? প্রকৃতিতে এত এত কণা। কিন্ত্ত কণাগুলি কী দিয়ে তৈরি কেউ জানে না। বিজ্ঞানীরা শুধু জানে কীভাবে তৈরি-এতটুকুন পর্যন্ত। তাই বিজ্ঞানীদের নিঃসংকোচ স্বীকারোক্তিঃ বিজ্ঞান না পারে অণু-পরমাণু পরিমাণ কিছু সৃষ্টি করতে না পারে পুরোপুরি ধ্বংস করতে। এ প্রসঙ্গে  আলবার্ট আইনস্টাইন বলেনঃ পদার্থ একেবারে চুপসে যেতে পারে না। একসময় সূক্ষ্ণ বিন্দুতে গিয়ে থেমে যাবে পদার্থটি যাকে পদার্থ বিজ্ঞানে পরম বিন্দু বা সিঙ্গুলারিটি বলা হয়।

 

 

 

 

 

মহাবিশ্বে কমপক্ষে ১০০ বিলিয়ন বা ১০ হাজার কোটি গ্যালাক্সি অআছে। প্রতিটি গ্যালাক্সিতে অআছে কমপক্ষে ১০০ বিলিয়ন বা ১০ হাজার কোটি নক্ষত্র। এই বিশাল মহাবিশ্বের অতি ক্ষুদ্র একটি অংশ হলো অআমাদের পৃথিবী। অআমরা জানি যে, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এই মহাবিশ্ব বিশাল থেকে বিশালতর হচ্ছে। কিন্ত্ত একটা মৌলিক প্রশ্ন থেকেই যায়, এই মহাবিশ্বের শুরু কোথায় অআর শেষই বা কোথায়?(বিচি, অক্টোবর ২০১৯, বর্ষ ৪, সংখ্যা ০১, পৃঃ ১৬)।

কিন্তু মানুষ অআরও গভীরে গিয়ে যখন থেকে প্রশ্ন করতে শিখেছে, এই যে সৌরজগৎ এবং অআকাশ জুড়ে অসংখ্য নক্ষত্রপুন্জ তাদের মধ্যে সম্পর্ক কী, কেন বৃহৎ কাঠামোয় সব এক সুতায় বাধা-সেই প্রশ্নের উত্তর খোঁজার জন্য গড়ে কসমোলজি বা মহাবিশ্বের বিজ্ঞান ((সূত্রঃ বিজ্ঞান চিন্তা, পৃঃ ১৬)।

এই মহাবিশ্ব কোথা থেকে এলো? এটা হলো অআদি প্রশ্ন। ১৩ দশমিক ৭ বিলিয়ন বছর অআগে এক মহাবিস্ফোরণ ঘটেছিল, যা থেকে এই মহাবিশ্ব জন্ম নিল। কেন? কেমন করে? তার অআগে কী ছিল? কেউ জানে না। কোথায়?(বিচি, জুন ২০১৯, বর্ষ ...., সংখ্যা ..., পৃঃ ৩৬-৩৭)।

পুরো মহাবিশ্বে বর্তমানে যে পরিমাণ মহাকর্ষ অআছে, তার মাত্র ১০ শতাংশ অআমাদের জানা পদার্থের জন্য সৃষ্টি হয়েছে। বাকী ৯০ শতাংশই হয়তো অজানা কিছুর জন্য। অআমরা জানি না জিনিসটা কী, সেটা কেমন কিংবা কীভাবে কাজ করে। জিনিসটা যাই হোক; এ ব্যাপারে বিজ্ঞানীরা নিশ্চিত, একটা কিছু অবশ্যই অআছে। যেহেতু জিনিসটি লুকিয়ে অআছে, এখনো ধরা দেয়নি কিন্ত্ত মহাকর্ষ সৃষ্টি করতে পারছে সেহেতু এসব সমস্যার সমাধান পেতে হলে অআমাদের এমন তত্ত্ব অআবিস্কার করতে হবে যেটি চারটি বল-কে একীভূত করতে পারবে। ((সূত্রঃ বিজ্ঞান চিন্তা, পৃঃ)।

মহাবিশ্বের জন্মের পর পরই কোনে কণার জন্ম হয়নি। এমনকি প্রকৃতির যে চার বল-মহাকর্ষ, বিদ্যুৎ চুম্বক, সবল ও দূর্বল নিউক্লিয় বল-এগুলোর অআলাদা কোনো অস্তিত্ব ছিল না । (সূত্রঃ বিজ্ঞান চিন্তা, পৃঃ..)।

সেই আদি মহাবিস্ফোরণের শক্তি থেকে মৌলিক কণা এবং প্রতি কণার সৃষ্টি হলো। মৌলিক কণা হলো সেই কণা, যাকে আজ পর্যন্ত ভাঙা যায়নি। পদার্থ বিদ্যার আইন মেনে এই কণাগুলো জুটি বাঁধল। তৈরি হলো প্রোটন, নিউট্রন জাতীয় কণা। তারপর তৈরি হলো অণু-পরমাণু। এদের অবিরাম সংঘর্ষ থেকে তৈরি হলো গ্যালাক্সি, তারা, গ্রহ। (সূত্রঃ বিজ্ঞান চিন্তা, পৃঃ.৩৭)।

কণা জগৎ আর মহাজগতকে যুগপৎ পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে মহাবিশ্বের জন্মোতিহাস জানার জন্য বিংশ শতাব্দীর দ্বিতীয় দশকে কণা ত্বরক যন্ত্রের প্রথম সংস্করণের সূচনা হয়েছিল মার্কিন বিজ্ঞানী অআর্নেষ্ট লরেন্সের হাত ধরে। পরে ইতিহাসের অনেক ধাপ পেরিয়ে অবশেষে সার্ণ কর্তৃক ২০০৮ সালে ল্যাজ হ্যাড্রন কলাইডার নাম ২৭ কিলোমিটার পরিধির সাইক্লোটন যন্ত্র (কণা চূর্ণকারক যন্ত্র) স্থাপন করে ক্রমাগত ৪ বছর গবেষণার পর সেকেন্ডে ট্রিলিয়ন ট্রিলিয়ন কম্পন সৃষ্টি করে মাধ্যমে ২০১২ সালে মহাবিশ্বের আদি ভরপূর্ণ হিগস বোসন কণার কৃত্রিম উৎপাদনে বিজ্ঞানীরা সমর্থ হন। এবার মহাবিশ্বের প্রথম আদি গ্যালাক্সির সন্ধানে ২০..সালে পাঠানো হয় ত্যাধুনিক জেমস টেলিস্কোপ। ভয়েজার-১ পরে ভয়েজার-২ পাঠানো হয়েছে মহাকাশে তন্ন তন্ন করে তথ্য সংগ্রহ করার জন্য। ভয়েজার-২ বহু বছর আগেই সৌর জগত ছাড়িয়ে এখন সেকেন্ডে ৭ মাইলেরও অধিক বেগে ক্রমাগতভাবে অসীমের পানে ছুটেই চলেছে মহাবিশ্বকে জানার প্রবল আগ্রহ নিয়ে ।

১৯৩৯ সালে রচিত অআইনস্টাইনের গবেষণাপত্র মতে, পদার্থ একটি বিন্দু বা সীমার পর আর সংকুচিত হতে পারে নাকোথায়?(বিচি, মার্চ, পৃঃ ৩৮)।

► সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে নিজেদের নিউক্লিয়ার জ্বালানী এক সময় ফুরিয়ে ফেলে নক্ষত্র। স্বাভাবিকভাবে তখন নক্ষত্রটি সংকুচিত বা চুপসে যেতে থাকবে নাকোথায়?(বিচি, মার্চ, ২০২০,  পৃঃ ৩৯)।

► এখানেই শেষ নয়। মৌলিক কণা অআছে অআরও। হিগস বোসন ও গেজ বোসন। গেজ বোসন কণারা বলবাহী হিসেবে কাজ করে।  (বিচি, মার্চ, ২০২০,  পৃঃ ৪৪)। 


ওয়ামা তাওফিকী ইল্লা বিল্লাহ।


                                                                                                 


Comments

Popular posts from this blog

যে জাতির রাজা-বাদশাহরা ছিলেন বিজ্ঞানী!

সেন্টার অব ইসলামিক রিসার্চ ফর নিউক্লিয়াস অ্যান্ড নিউরণ (CIRNN )

Update 8 Dec, 2023